রাজকীয় প্রজাপতির রূপের সাতকাহন
ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডটকম:
সৌন্দর্যের বর্ণনা দিয়ে শেষ করা যাবে না এমন পতঙ্গের কথা বললে প্রথমেই আসে প্রজাপতির নাম। আর এ প্রজাপতির মধ্যে বিশ্বজুড়ে পরিচিত মোনার্ক বাটারফ্লাই বা রাজকীয় প্রজাপতি। দীর্ঘ গবেষণার পর সম্প্রতি এ প্রজাপতিটি সম্পর্কে অজানা বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ করেছেন গবেষকেরা।
বাহারি রঙ আর চোখ জুড়ানো নকশাদার পতঙ্গ হিসেবে বিশ্ব জুড়ে পরিচিতি রয়েছে প্রজাপতির। ছেলে ভোলানো ছড়া থেকে শুরু করে কালজয়ী সাহিত্য, চিত্রকলা কিংবা ফটোগ্রাফিতে অবাধ বিচরণ এই প্রজাপতির।
আর এদের মধ্যে উজ্জ্বল কমলা রঙের পাখা আর তার উপর আঁকা কালো নকশার জন্য পরিচিত মোনার্ক বাটারফ্লাই বা রাজকীয় প্রজাপতি। এর মনকাড়া রঙ আর সৌন্দর্যের রহস্য উদ্ধারে বহুদিন ধরে কাজ করছেন গবেষকেরা।
বিজ্ঞানীদের গবেষণায় বেরিয়ে আসে মোনার্ক বাটারফ্লাই ছড়িয়ে পড়ার তথ্য। কানাডা থেকে হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে মেক্সিকোতে পাড়ি জমায় এ প্রজাপতি। এরপর প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড হয়ে এশিয়াসহ পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে মোনার্ক বাটারফ্লাই। অবশ্য কী কারণে মোনার্ক বাটারফ্লাইয়ের এই স্থানান্তর তা নিশ্চিত করে জানতে পারেননি বিজ্ঞানীরা।
পাশাপাশি রাজকীয় এ প্রজাপতির পাখার রঙের রহস্যও উন্মোচন করেছেন তাঁরা। মোনার্কের জিনে থাকা ‘মায়োসিন’ আর পাখায় থাকা ‘চিটিন’ নামের এক ধরণের প্রোটিনের সমন্বয়েই সৃষ্টি হয় এই উজ্জ্বল কমলা রঙের।
আর রঙিন এ ডানা মেলে উড়বার জন্য কমপক্ষে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা প্রয়োজন মোনার্ক প্রজাপতির। তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রীর নিচে নামলে উড়া তো দূরের কথা স্বাভাবিক নড়াচড়াও করতে পারে না এরা।
প্রধান গবেষক লিংকন এর তথ্যমতে জানা যায়, “মোনার্ক বাটারফ্লাইয়ের জিন ঠিক কিভাবে কাজ করে তা জানতেই এই গবেষণায় নামি আমরা। তবে কষ্টের বিষয় শিল্পায়ন ও নগরায়নের কারণে গত ২০ বছরে সারা বিশ্বে এদের সংখ্যা ৯০ শতাংশ কমে গেছে।
দুই থেকে সর্বোচ্চ চার সপ্তাহ বেঁচে থাকা রাজকীয় প্রজাপতি দল বেঁধে বের হয় খাদ্য সংগ্রহে। এদের পুরো জীবনটাই কাটে তরল জাতীয় খাবার খেয়ে। সচরাচর ১০ থেকে ১২ ফুটের বেশি দূরের কিছু দেখতে পায়না মোনার্ক। তবে একটি পর্যায় পর্যন্ত অতিবেগুনী রশ্মি দেখতে পেলেও মানুষ বা অন্য কোনো প্রাণী দেখতে পায় না মোনার্ক।
প্রতিক্ষণ/এডি/আকিদুল